দক্ষরা দ্রুত কানাডায় অভিবাসী হবে
দ্য বেঙ্গলি টাইমস ডটকম
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে কানাডার দীর্ঘস্থায়ী সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে দ্রুত, কার্যকর ও নমনীয় একটি অভিবাসন নীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ইকোনমিক অ্যাকশন প্লান-২০১২ ঘোষণা করেছে। ঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন (সিআইসি) কানাডা ২০০৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির আগে যারা অর্থনৈতিক অভিবান কমসূচির আওতায় দক্ষ শ্রমিক ক্যাটাগরিতে আবেদন করেছে, প্রক্রিয়া বন্ধ করে তাদের প্রায় সবার অর্থই ফিরিয়ে দেওয়া হবে, পাশাপাশি তামাদি হয়ে যাওয়া আবেদনপত্র বাতিল বলে বিবেচিত হবে। সিটিজেনশীপ ও ইমিগ্রেশন মন্ত্রী জেসন কেনি জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল শ্রমবাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ক্ষেত্রে কানাডার কেন্দ্রীয় দক্ষ শ্রমিক কর্মসূচির বকেয়া আবেদনের বিষয়টি অন্যতম প্রতিবন্ধক হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আট বছর ধরে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারায় নতুন আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা কমে আসছে। এর ফলে কানাডার জন্য আশুপ্রয়োজনীয় মেধাবী ও দক্ষ একটি জনশক্তি গড়ে তোলা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, ইকোনমিক অ্যাকশন প্লানের আওতায় সিআইসি অর্থনৈতিক অভিবাসন কর্মসূচিকে সময়োপযোগী করে কানাডার শ্রমবাজারের চাহিদা মেটাতে সঠিক দক্ষতাসম্পন্ন আবেদনের ব্যাপারে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং তাদের বছর ভিত্তিতে নয় বরং নির্দিষ্ট মাসের ভিত্তিতে অভিবাসনের অনুমতি দেওয়া হবে। বিদ্যমান যোগ্যতা মানদণ্ড অনুযায়ী ফরেন স্কিলড ওয়ার্কার্স (এফএসডব্লিউ) ক্যাটাগরিতে করা আবেদনের ক্ষেত্রে সৃষ্ট জট অপসারিত হলে সিআিইসির পক্ষে দক্ষ শ্রমিকদের কানাডায় আসার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর ওপর নজর দেওয়া সহজতর হবে।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, সিআইসি দক্ষ বিদেশি শ্রমিক ক্যাটাগরিতে ২০০৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির আগে যারা আবেদন করেছে, তাদের ফাইল বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে অভিবাসন কর্মকর্তা ২০১২ সালের ২৯ মার্চ ঘোষিত নির্বাচন মানদণ্ড অনুযায়ী যেসব আবেদনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, সেসবও বন্ধ হয়ে যাবে। প্রস্তাবিত এই আইনের ফলে প্রায় দুই লাখ ৮০ হাজার আবেদনকারী এবং তাদের পোষ্যের আবেদনপত্র বাতিল হয়ে যাবে ধারণা করা হচ্ছে। সিআইসি শিগগিরই নতুন আইনের প্রভাব পড়া এফএসডব্লিউ আবেদনকারীদের দেওয়া ফি বাবদ অর্থের পুরোটাই ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে। অন্যদিকে আনুমানিক ২০ হাজার আবেদনকারী, যারা নির্বাচনী মানদণ্ডটির ধাপ পেরিয়ে এসেছে, সিআইসি তাদের কানাডায় আসা না আসার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত আবেদনপ্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
বিগত এক দশকে কানাডায় আসার জন্য এফএসডব্লিউ আবেদনের সংখ্যা অত্যাধিক বেড়ে অভিবাসীর বার্ষিক মোট সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যায়। এর ফলে আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হয়। ২০০৮ ও ২০১০ সালে দুটি কর্মসূচির মাধ্যমে অনিষ্পন্ন আবেদনপত্রের মাত্রা কমানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এর পরও বিপুল পরিমাণ আবেদনপত্রের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বকেয়া থেকে যায়। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ২০১২ সালে ঘোষিত সর্বশেষ নীতিমালার ফলে কানাডায় দক্ষ শ্রমিক আসার হার তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাড়বে। তবে অতীতে করা অনেক আবেদনপত্রের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন